Tuesday, July 28, 2015

অন্যভাবে ভাবছেন ইমরুল

Share it Please


বৃষ্টি শেষ পর্যন্ত ড্র করে দিল চট্টগ্রাম টেস্ট। নইলে ফলাফল হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনাই ছিল। বাংলাদেশ জিতত, নয়তো দক্ষিণ আফ্রিকা। ইমরুল কায়েসের অবশ্য ফলাফল নিয়ে চিন্তা নেই। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দলের বিপক্ষে টেস্ট খেলতে পারাটাকেই বড় প্রাপ্তি মনে করছেন বাংলাদেশ দলের বাঁহাতি ওপেনার।
‘ওরা বিশ্বসেরা দল। তাদের সঙ্গে ভালো খেলতে পারলে বোলার-ব্যাটসম্যান সবারই আত্মবিশ্বাস বাড়বে। ফলাফল পরের ব্যাপার। আমার মনে হয় এদের সঙ্গে টেস্ট খেললে অন্য দলগুলোর সঙ্গে খেলাটা আরও সহজ হয়ে যাবে’—মিরপুরে কাল অনুশীলন শেষের সংবাদ সম্মেলনে দলের প্রতিনিধি হয়ে এসে বলছিলেন ইমরুল।
টেস্ট র্যা ঙ্কিংয়ের এক নম্বর দল দক্ষিণ আফ্রিকা। বোলারদের র্যা ঙ্কিংয়েও সেরা দশে আছেন তাদের তিনজন। এমন বোলিং আক্রমণের মুখোমুখি হওয়াটা টেস্টের নয় নম্বর দলের ব্যাটসম্যানদের জন্য কঠিন হওয়ারই কথা। বাজে বল কম পাওয়া যায়, তার ওপর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নিয়ে গবেষণা করে চট্টগ্রামে স্টেইন-মরকেলরাও নাকি ধরেছিলেন ভিন্ন পথ। প্রথম টেস্টের অভিজ্ঞতা জানাতে গিয়ে ইমরুল বললেন, ‘ওরা জানত শর্ট বলে কাজ হবে না। তাই ভালো লাইন-লেংথে বল করে গেছে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার গতির সামনে চট্টগ্রামে তামিম-ইমরুলদের পরিকল্পনা ছিল, যত বেশি সময় সম্ভব উইকেটে থাকা। পরের দিকের ব্যাটসম্যানদের জন্য তাহলে কাজটা সহজ হয়ে যায়। ৩০ জুলাই থেকে শুরু ঢাকা টেস্টেও একই লক্ষ্য ওপেনারদের। জানিয়ে দিলেন দলীয় লক্ষ্যটাও, ‘ড্র করতে পারলে সেটাই আমাদের জন্য বড় অর্জন হবে। আগের ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং সবকিছুতেই আমরা ইতিবাচক ক্রিকেট খেলেছি। যদি এবারও পরিকল্পনা কাজে লাগাতে পারি, এই টেস্টেও আমরা ভালো করতে পারব।’
তবে চট্টগ্রামের উইকেট আর ঢাকার উইকেটে পার্থক্য আছে। শেষ পর্যন্ত কোন পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নামতে হয়, তা আগে থেকে বলা কঠিন। ইমরুলের মতে, ‘সব নির্ভর করছে উইকেটের ওপর।’ চট্টগ্রামের উইকেটে টিকে থাকা গেলেও রান করাটা কঠিন ছিল। ঢাকা টেস্টে তাই সতীর্থদের প্রতি তাঁর পরামর্শ, ‘উইকেট এবং কন্ডিশন বুঝে খেললেই ভালো হবে।’
ওয়ানডে সিরিজে হারের আগে দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জিতলেও তাতে ক্ষুধা কমার কথা নয় দক্ষিণ আফ্রিকার। চট্টগ্রাম টেস্ট ড্র হওয়ায় সেটি বরং বেড়েই যাওয়ার কথা। তবে ইমরুল তাতে ভয়ের কিছু দেখেন না। গত কিছুদিনের সাফল্য এসেছে নিজেদের স্বাভাবিক খেলা খেলে। এবারও তিনি সেটাকেই পাথেয় করতে চান, ‘আমরা মৌলিক কাজগুলো ঠিকভাবে করছি বলেই হয়তো সফল হচ্ছি। চেষ্টা করব, আগে যে রকম স্বাভাবিক ক্রিকেট খেলেছি, সেভাবেই খেলে যেতে।’
চন্ডিকা হাথুরুসিংহের আমলে দলের আবহে দারুণ পরিবর্তন দেখছেন ইমরুল। কোচ যে সবাইকে ভয়ডরহীন ক্রিকেটের মন্ত্র দিচ্ছেন, শট খেলায় বিধিনিষেধ আরোপ না করে অফুরান স্বাধীনতা দিচ্ছেন, সবকিছুরই প্রশংসা তাঁর কণ্ঠে, ‘আমার এটাকে খুব ইতিবাচক মনে হয়। দলের আবহ বদলে গেছে। যে-ই আসে, চিন্তা করে পারফর্ম করার। একটা ম্যাচ খারাপ করলে আরেকটা ম্যাচ চাপে থাকে। এটা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্যই ভালো। নতুনরা এসে ক্ষুধার্ত থাকছে ভালো কিছু করার জন্য।’
ক্ষুধাটা আছে ইমরুলেরও। বিশ্বকাপে ব্যর্থতা ভুলেছিলেন পাকিস্তানের বিপক্ষে খুলনা টেস্টে ক্যারিয়ার-সর্বোচ্চ ১৫০ রান করে। এরপর ভারতের বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টের প্রথম ইনিংসে ৭২। এই ধারাবাহিকতায় দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজেও ভালো একটা ইনিংস পাওনা ইমরুলের কাছে। চট্টগ্রামে সেটা পাননি। তাতে কী, ঢাকা টেস্ট তো আছে!

0 comments:

Post a Comment